মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল
চেয়ারম্যান, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ
পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট স্বপরিবারের স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্ধকার যুগের সূত্রপাত হয়। সেসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মৌলভি সৈয়দ এবং এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের নেতারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মৌলভি সৈয়দ। নানা নির্যাতন সয়ে চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হন মহিউদ্দিন চৌধুরীরসহ অন্য নেতারা। এরপর নানা ঘটনা প্রবাহ পেরিয়ে স্বৈরশাসকরা ক্ষমতায় আসে। চলতে থাকে পাকিস্তানি ভাবধারায় বাংলাদেশকে পরিচালিত করার ষড়যন্ত্র।
যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নীতির কথা প্রকাশ্যে আলোচনা করার সুযোগ ছিল না তখনো এই বীর চট্টলার কিছু সাহসী যোদ্ধা বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা প্রচার করে গেছেন অসীম সাহসে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়। সেসময়ের সার্কিট হাউসের সামনে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক সংগঠকের সাহসী উদ্যোগে এই বিজয় মেলার সূচনা হয়। পরবর্তীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা চট্টলবীর সাবেক সফল মেয়র আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রত্যক্ষ প্রণোদনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অনুগামী হয়ে পরিণত হয় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায়।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বিজয় মেলা এখন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। যখন বিজয় মেলা শুরু হয়েছিল তখন চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি একঘরে হয়ে পড়েছিল। আর মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি এতটা জেকে বসেছিল যে সেখান থেকে উত্তরণের জন্যই বিজয় মেলার যাত্রা শুরু। বিজয় মেলার মঞ্চে স্মৃতিচারণা হতো। সেই স্মৃতিচারণা থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি ওঠে। জ্যেষ্ঠ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধারা রাজধানী থেকে এসে এখানে দাবি জানিয়ে যেতেন। ঢাকায় তখন নানা কারণে প্রকাশ্যে সেভাবে এই দাবি জানানো যেতো না।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, এই বিজয় মঞ্চে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আমির হোসেন আমু, মেজর রফিকুল ইসলাম, কাদের সিদ্দিকীসহ আরো অনেকে এসে স্মৃতিচারণ করতেন। তারা দাবি জানাতেন। পরে গণমাধ্যমে এসব খবর এলে তখন জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত হতো। ধীরে ধীরে বিজয় মেলা হয়ে উঠে বাংলাদেশে প্রগতিশীল শক্তির রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সাংগঠনিক অবস্থানের স্বীকৃতি স্বরূপ। বিজয় মেলা বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াতসহ প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি বাধা দেয়াসহ অনেক কিছু করেছিল। তখন আমাদের মূল শক্তি ছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। এবারেও তিনি সবসময় মেলার আয়োজনের খোঁজ রাখছেন।