বিজয় মেলার স্মৃতিচারণার মঞ্চে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি প্রকাশ্যে এসেছিল বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ আয়োজিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ইতিহাসের এ বিষয়টির উপর আলোকপাত করেন। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় র্যালি আয়োজন উপলক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বিজয় র্যালি এখন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। যখন বিজয় মেলা শুরু হয়েছিল তখন চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি একঘরে হয়ে পড়েছিল। আর মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি এতটা জেকে বসেছিল যে, সেখান থেকে উত্তরণের জন্যই বিজয় মেলার যাত্রা শুরু। বিজয় মেলার মঞ্চে স্মৃতিচারণা হতো। সেই স্মৃতিচারণা থেকেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি ওঠে। জ্যেষ্ঠ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধারা রাজধানী থেকে এসে এখানে দাবি জানিয়ে যেতেন। ঢাকায় তখন নানা কারণে প্রকাশ্যে সেভাবে এই দাবির বিষয়ে কথা বলা যেত না। নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল তখন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, এখানে বিজয় মঞ্চে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আমির হোসেন আমু, মেজর রফিকুল ইসলাম, কাদের সিদ্দিকীসহ আরো অনেকে এসে স্মৃতিচারণ করতেন। তারা দাবি জানাতেন। পরে গণমাধ্যমে এসব খবর এলে তখন জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত হতো। ধীরে ধীরে বিজয় মেলা হয়ে উঠে বাংলাদেশে প্রগতিশীল শক্তির রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সাংগঠনিক অবস্থানের স্বীকৃতি স্বরূপ। বিজয় মেলা বানচাল করতে বিএনপি-জামায়াতসহ প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি বিভিন্ন সময় বাধা দেয়াসহ অনেক কিছু করেছিল। তখন আমাদের মূল শক্তি ছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। এখনও প্রধানমন্ত্রী সবসময় বিজয় মেলার বিষয়ে খোঁজ নেন। তিনি আমাদের উৎসাহিত করেন। আমাদের বিজয় মেলার মহাসচিব গত ২৮ তারিখ দেখা করে উনাকে সার্বিক অবহিত করেছেন।
আগামী বছর জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে মুজিব বর্ষ পালনে বিজয় মেলা পরিষদের পক্ষ থেকেও কিছু কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেয়া হবে জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, মেলা পরিষদের পক্ষেও কিছু উদ্যোগ নেব। সেক্ষেত্রে জনসমাগমের চাইতে এমন কর্মসূচি করতে চাই যাতে পরবর্তী প্রজন্ম সম্পৃক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি যেভাবে প্রজন্মকে ধ্বংসের পথে নিতে চেয়েছিল তা যেন কখনো আর করতে না পারে।
সভায় বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মো. ইউনুছ, নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোশতাক আহমেদ, উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
১৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের সামনের বিজয় শিখা চত্বর থেকে বিজয় র্যালি শুরু হবে।