৪ দিন ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের কর্মসূচী ঘোষণা

350

দেশরিভিউ সংবাদ: মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ আজ ৯ ডিসেম্বর বেলা ৩ টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে ৪ দিন ব্যাপী কর্মসূচী ঘোষণা করে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

এবারের আয়োজনে শুধু আলোচনা সভা থাকছে, আগের মতো মেলা এবার হচ্ছে না। বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ।

এবার বিজয় শিখা প্রজ্জ্বলন, বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের আলোচনা সভা হবে। পাশাপাশি বিজয় মেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে স্মরণ করা হবে। তবে এ বছর পণ্যমেলার পাশাপাশি স্মৃতিচারণামূলক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী থাকবে না।

‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বীর বাঙালির অহংকার’ এই স্লোগান নিয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে বিজয়ের মাসে চট্টগ্রামে আয়োজিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা।
এবার অন্য বছরের মতোই ১০ ডিসেম্বর বিকাল ৩টায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের গোল চত্বরে বিজয় শিখা প্রজ্জ্বলন করা হবে। ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হবে। ১৫ ডিসেম্বর মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আলোচনা সভা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, “বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারীর প্রেক্ষিতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে এবারের আয়োজন করা হয়েছে।
“দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতা রক্ষার পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জনস্বাস্থ্যের নিরাপত্তার কথা ভেবে এভাবে আয়োজন ।”

সংবাদ সম্মেলনে ইউনুস বলেন, “এ বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে মুজিববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। করোনার কারণে জাতীয়ভাবে অনেক কর্মসূচি কাটছাঁট করা হয়েছে। আগামী বছর জাতি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবে। এরূপ পরিস্থিতিতে স্বাধীনতা বিরোধী একাত্তরের ঘাতক-দালাল যুদ্ধাপরাধীরা তাদের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের যোগসাজোশে সুকৌশলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে টার্গেট করেছে।

ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে তারা এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তার পিতা চট্টলার সিংহ পুরুষ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ন্যায় মৌলবাদ প্রতিরোধে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম সোচ্চার হয়েছেন। পরবর্তীতে এই প্রতিরোধ কর্মসূচি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।”
তিনি বলেন, “আমরা চট্টগ্রামবাসী, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধারা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পরবর্তী প্রজন্ম তার সাথে আছি। দেশ মাতৃকার বৃহত্তর প্রয়োজনে যদি জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে সদলবলে যদি মাঠে নামতে হয়, তাহলে তাদের মোকাবেলায় আমরা সদা প্রস্তুত।
“করোনা পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনকে ইস্যু করে যারা ফায়দা হাসিল করতে চায়, তারা প্রকৃত আলেম নয়। তার উগ্র ও পাশবিক মন-মানসিকতার কাঠমোল্লা। যারা ধর্মের কোমল অনুভূতি ও স্পর্শকাতর বিষয়গুলোকে ব্যবহার করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে চায়।”
মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস বলেন, “আমরা এ মোল্লাদের বিরুদ্ধে। আমরা সকল সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। এর ব্যত্যয় হলে আমরা রুখে দাঁড়াব। যেভাবে একাত্তর সালে অস্ত্র হাতে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম।”
সংবাদ সম্মেলনে নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিন, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ, শ্রমিক লীগ নেতা আবুল হোসেন আবু ও নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরসহ মেলা পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।